কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মোঃ মুনজুরুল ইসলাম
কুষ্টিয়ায় এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর চাষিরা ব্যাপকহারে পাট চাষে ঝুঁকে পড়েন। সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি সত্ত্বেও ন্যায্য দাম পাওয়ায় কৃষকদের মুখে এখন খুশির হাসি। এক সময়ের ‘সোনালী আঁশ’ কালের বিবর্তনে চাষিদের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়ালেও বর্তমানে আবার পাট চাষে ফিরেছে কৃষকরা। একসময় অধিক আয়ের আশায় কুষ্টিয়ার চাষিরা তামাক চাষে ঝুঁকে পড়লেও কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় আবার ঐতিহ্যবাহী পাট চাষে মনোযোগী হয়েছেন। ফলে মাঠের পর মাঠ এখন সবুজ পাটে ভরে উঠেছে। চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও শুকানোর কাজে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়ায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৯ হাজার ৮২০ হেক্টর জমি। বাস্তবে আবাদ হয়েছে ৪০ হাজার ৯৬৬ হেক্টরে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫২৩ মেট্রিক টন। তবে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন। জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে কুষ্টিয়া সদরে পাট হয়েছে ২ হাজার ১৯৫ হেক্টরে, খোকসায় ৪ হাজার ৩৫৮ হেক্টরে, কুমারখালীতে ৫ হাজার ২৮৩ হেক্টরে, মিরপুরে ৪ হাজার ৯৭৫ হেক্টরে, ভেড়ামারায় ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টরে এবং দৌলতপুরে সর্বাধিক ১৯ হাজার ৮০৫ হেক্টরে। পাট চাষি আব্দুল করিম জানান, “ফলন ভালো হলেও বাজারমূল্য আমাদের প্রত্যাশা মতো নয়। দাম যদি কিছুটা বাড়ানো হতো তাহলে আমরা আরও বেশি লাভবান হতাম।” অপর কৃষক আব্দুর রম বলেন, “আমাদের পরিশ্রম অনুযায়ী পাটের দাম যদি ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মন হতো তাহলে আমরা খুশি হতাম।” শহরতলীর বাড়াদী গ্রামের চাষি ছমির উদ্দিনের দাবি, “বিঘা প্রতি চাষের খরচ উঠে আসছে না। সার-কীটনাশকসহ সব কিছুর দাম বাড়ায় লাভ কমে গেছে। সরকার যদি ন্যায্য দাম নিশ্চিত করে, তাহলেই আমরা টিকে থাকতে পারব। এ বিষয়ে কৃষিবিদ ড. হায়াত মাহমুদ, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কুষ্টিয়া জানান, “এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে খাল-বিল পানিতে ভরে গিয়েছে, তাই পাট পচন নিয়েও চাষিদের দুশ্চিন্তা নেই। তবে কৃষকদের অভিযোগের মতো বাজারমূল্যের সংকট নেই। কৃষি বিভাগও সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হলে পাটের সুদিন আরও দ্রুত ফিরে আসবে। কুষ্টিয়ার কৃষকরা তাই দাবি জানিয়েছেন— পাট চাষে সরকারি সহযোগিতা ও ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ নিশ্চিত হলে ‘সোনালী আঁশ’ আবারও দেশের অর্থনীতিতে গৌরব ফিরিয়ে আনবে।
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |