পাবনা প্রতিনিধি :
পাট চাষিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই স্লুইস গেটের পানি ছেড়ে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এতে ২০০ বিঘা জমির আমন ধান এখন পানির নিচে। পাবনার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলে স্লুইস গেটের পানি ছেড়ে দেন ইউএনও। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন ভুক্তভোগী চাষিরা। সরেজমিনে দেখা যায়, সুজানগর উপজেলার বাদাই গ্রামের অংশে গাজনার বিল পানিতে ভরে গেছে। পানির ওপরে কিছু কিছু ধানগাছের সবুজ মাথা বেরিয়ে আছে। তবে বেশিরভাগ ধানক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। আকতার হোসেন নামের একজন চাষি বলেন বলেন, ‘আমন আবাদে খরচ অনেক কম হয়। তাই এই ধান নিয়ে আমাদের আশা বেশি। এখান থেকেই আমাদের বছরের খাবারের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু সব আশা এখন পানির নিচে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আমরা।’ বাদাই গ্রামের চাষি বকুল শেখ বলেন, ‘চাষাবাদ করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। আবাদ করেই সংসার চলে। এবছর ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান বুনেছি। কিন্তু হিসেব ছাড়া স্লুইস গেটের পানি ছাড়ায় একরাতেই সাত বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। এবছরের আবাদের আমার তো সবশেষ। কি যে করবো ভেবে পাচ্ছি না।’ আরেক চাষি নাদের শেখ বলেন, ‘আমাদের এখানে তালিমনগর স্লুইস গেট নিয়ন্ত্রণ করেন ইউএনও। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা-পরামর্শ না করেই পানি ছেড়ে দিয়েছেন। এক রাতের মধ্যে ধান সব ডুবে গেছে। এর আগে কখনো এমন হয়নি।’ মকবুল হোসেন ও রিজাই শেখসহ কয়েকজন চাষি জানান, ৫০০ বিঘা জমির মধ্যে ২০০ বিঘা জমির আমন ধান এখন পানির নিচে। যদি ধীরে ধীরে অল্প করে পানি ছাড়া হতো তাহলে এরকম ক্ষতি হতো না। এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা সেচ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, পাটচাষি ও বিলে মৎস্য সম্পদের কথা চিন্তা করে জুলাইয়ের শুরুতে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ পাট কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু পানির সংকট রয়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানির সঙ্গে রেণু পোনা বিলে আসে। এসব মিলিয়ে গত ১ জুন পানি ছাড়া হয়। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে কৃষি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবছর সুজানগর উপজেলায় দুই হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধান আবাদ হয়েছে। এর বিপরীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার হাজার ৩৭৭ মেট্রিক টন। কিন্তু স্লুইস গেটের পানির কারণে বিলের মধ্যে থাকা বোনা আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, চাষিরা আমাদের জানিয়েছিলেন, পানি একেবারে না ছেড়ে যেন ধীরে ধীরে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমরা ইউএনওকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু উঁচু এলাকার পাট চাষিদের চাপ ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পানি ছাড়তে তিনি বাধ্য হন। ফলে ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষতির একটা প্রাথমিক রিপোর্ট ঊর্ধ্বতনদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবো।
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |